Gastric problems and their remedies-গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও তার প্রতিকার
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও তার প্রতিকার
আজ আলোচনা করবো গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও তার প্রতিকার সমন্ধে। পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিক এর জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের ঐষধ ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় সমন্ধে।
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি নাই এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। নিয়মিত ওষুধ তো খানই তবুও অফিস-আদালতে কিংবা কাজকর্মে যাওয়ার সময় এমনকি কোথাও বেড়াতে গেলেও সঙ্গে এসিডিটির ওষুধও নিয়ে যান।
যারা ভোগেন কেবল তারাই বোঝেন এটি কত যন্ত্রণার। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত, পার্টিতে মসলায্ক্তু খাবার খেলে তো শুরু হয়ে যায় অস্বস্তিকর গ্যাসের সমস্যা। ফাস্ট ফুড, ব্যস্ত জীবনযাত্রার যুগে গ্যাস, পেটের অসুখ এখন ঘরোয়া রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেকোনো বাসায় গেলেই গ্যাস্ট্রিকের ১ পাতা ওষুধ অবশ্যই পাওয়া যায়।
প্রথমেই আমরা জানব কেন পেটে গ্যাস হয় ঃ
খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করা, পানি কম খেলে বা খাবারে আঁশের পরিমাণ কম থাকলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া হজম না হলে পেটে গোলমাল দেখা দিতে পারে। কিছু প্রাকৃতিক খাবার আছে, যা খেলে গ্যাসসহ পেটের অন্যান্য সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
আর দোকানে যাবেন এক কোম্পানিরই কয়েক ধরনের গ্যাস্টিকের ওষুধ পাবেন। খোঁজ নিয়ে জানুন সারাদেশে যে পরিমাণ এসিডিটির ওষুধ চলে অন্য সব রোগ মিলেও এ পরিমাণ হয় না। ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে খাবারের দিকে মনযোগী হউন। যে খাবার গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে সেগুলো খাবারের তালিকায় রাখুন। প্রথমদিকেই সচেতন না হলে পরবর্তীতে আলসার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ তো গেল বড়দের কথা এবার বলব ছোটদের না বলা কথা ঃ
দিনের বেলায় গ্যাসের সমস্যা শিশুদের মধ্যে একটি খুবই সাধারণ ঘটনা।
কিছু শিশুরা ঠিকঠাক গ্যাস মুক্ত করতে পারে আর কিছুরা পারে না। কীভাবে গ্যাস প্রতিরোধ করা এবং তার চিকিৎসা করা যায় তা জানলে আপনি এবং আপনার শিশু অনেক সমস্যা মুক্ত হতে পারেন।
বাচ্চারা যে মায়ের দুধ বা ফরমূলা দুধ খায় তার প্রোটিন এবং ফ্যাটের হজম করা থেকে স্বাভাবিক ভাবে গ্যাস তৈরি হয়। গ্যাস সর্বদা ভাসমান থাকে এবং পরিপাক নালীর উপর সামান্য চাপ সৃষ্টি করে এবং সেটির মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাইরে বেরোবার পথ খুঁজে নেয় কখনও কখনও, উৎপন্ন হওয়া অতিরিক্ত গ্যাস চাপ সৃষ্টি করে শিশুকে কিছু ব্যথা দিতে পারে।
অনেক সময় ভুলভাবে দুধ পানের জন্য অতিরিক্ত হাওয়া শিশুরা গিলে ফেলে।
অত্যধিক কান্নার ফলেও শিশুরা খাওয়ার আগে হাওয়া গিলে নেয়। কখনও কখনও অত্যধিক কান্নাকাটি গ্যাস তৈরী হবার লক্ষণ হতে পারে।
বাদাম, কফি, দুগ্ধ পণ্য যেমন পনির, মাখন, ঘি, মটরশুটি এবং মশলা, এই ধরনের খাবার মায়েরা খেলে, শিশুদের স্তনদুগ্ধ পানে গ্যাস সৃষ্টির কারণ হয়।
অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণও শিশুদের হজমশক্তিকে প্রভাবিত করে গ্যাস তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
বাচ্চারা তাদের চাহিদা জানাতে পারে শুধুমাত্র একটি মৌখিক উপায়ে তা হলো কান্না। এটা তাদের ক্ষুধা, ব্যথা, অস্বস্তি, ক্লান্তি, একাকীত্ব বা গ্যাসের কারণে তা বোঝবার জন্য প্রয়োজন তীক্ষ পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিটির জন্য আলাদা লক্ষণ রয়েছে। যখন গ্যাস থেকে ব্যথা পাওয়ার কারণে তারা কাঁদতে থাকে, কান্না প্রায়ই তীক্ষè মারাত্মক ও আরও তীব্র হয় এবং তার সাথে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি যেমন দেহের এ পাশ ও পাশ করা, হাত মুষ্টি খোলা ও বন্ধ করা, জোরে জোরে হাত পা ছোড়া আর হাঁটু বুকে ঠেকিয়ে হাঁসফাঁস করতে দেখা যায়।
এবার জেনে নেই কোন কোন খাবার দ্রæত এসিডিটি কমায় ঃ
আদা
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার হলো আদা। এই উপাদান গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, হজমে সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রæত সমাধানে সক্ষম। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে কাঁচা আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যার দ্রæত সমাধান পাবেন।
দই
দইয়ে ল্যাকটোব্যাকিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডাসের মতো নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়া দ্রæত খাবার হজমে সাহায্য করে সেই সঙ্গে খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তাই দই খেলে হজম ভালো হয়,গ্যাস কমে। এজন্য খাবারের পর দই খাওয়া বেশ কার্যকর। বিশেষ করে টক দই।
শসা
পেট ঠান্ডা রাখতে বেশ কার্যকরী খাবার শসা। কাঁচা শসা হজমেও সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়। এছাড়া এতে আছে প্রচুর সিলিকা ও ভিটামিন-সি। যা দেহের ওজন কমাতে আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়।
পেঁপে
পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। তাই নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের সমস্যা কম হবে। পেঁপে কাঁচা-পাকা দু’অবস্থায় খেতে পারেন। সবটাতেই উপকার পাবেন।
আনারস
আনারসে রয়েছে ৮৫ শতাংশ পানি এবং ব্রোমেলিন নামক হজমে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম যা অত্যন্ত কার্যকরী একটি পাচক রস। এটি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। তাছাড়া আনারস ত্বকের জন্যও উপকারী।
হলুদ
হজম সংক্রান্ত সব ধরনের সমস্যা সমাধানে হলুদ দারুণ কার্যকর। এটি চর্বিজাতীয় খাবার হজমে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া হলুদে প্রদাহনাশক উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমায়।
কলা
যারা বেশি করে লবণ খান, তাদের গ্যাস ও হজমে সমস্যা হতে পারে। কলায় যে পটাশিয়াম আছে তা শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। কলা হজমেও সাহায্য করে। দেহ থেকে দূষিত পদার্থ দূর করে দেয়।
পানি
পানির বহু গুণ। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস করে পানি পান করবেন, দেখবেন সারাদিন আর গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা সইতে হবেনা। কারণ পানি হজম শক্তি বাড়াতে বেশ কার্যকরী। তাছাড়া পানি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতেও কাজ করে।
গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। শুধু একটু নজর রাখতে হবে নিজের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি। উল্লেখিত খাবারগুলোর সঙ্গে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন তাহলে দেখবেন আপনাকে আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে হবে না। কিনতে হবে না ওষুধ এবং সাশ্রয় হবে আপনার উপার্জিত অর্থ।
এত কিছুর পরও যাদের গ্যাসের সমস্যা দূর হয়না তাদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের বিভিন্ন কোম্পানির ঔষধ ।
আর তাই এখন আলোচনা করব গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি’র ঔষধ ও তার ব্যবহার বিধি নিয়ে।
আপনারা বাজারে গেলে দেখতে পাবেন ঔষধের দোকানে নানা ঔষধ এ সমন্ধীয়। কোনটা ভাল কাজ করবে , কোনটা ভাল কোম্পানীর, কত দাম এসব যদি না জানতে পারেন তো দোকানি আপনাকে যা বলবেন তাই ঈমানী দায়িত্ব মনে করে পালন করা নেহায়েত বোকামী ছাড়া কিছুই নয়।
তাই আমরা যতদুর পারব আপনাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করব ইনশাল্লাহ।
ওমিপ্রাজল (ইংরেজি: ঙসবঢ়ৎধুড়ষব) হলো একটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর যা পাকস্থলীর এসিড নিঃসরণকে নিবৃত করে এবং এটি পেপটিক আলসার, গ্যাস্ট্রইসোফ্যাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ, জলিনজার-এলিসন সিনড্রোম এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি ঊর্ধ্ব অন্ত্রঘটিত রক্তক্ষরণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ হলো বমিভাব, বমি, মাথাব্যথা, পেটফাঁপা ইত্যাদি। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্লোস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিল কোলাইটিস, নিউমোনিয়া ও অস্থিক্ষয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধি। এটি সেবনের ফলে পাকস্থলীর ক্যান্সারের উপসর্গসমূহ প্রশমিত হয় ফলে রোগ নির্ণয় বিলম্বিত হতে পারে। এটি গর্ভাবস্থায় নিরাপদ কিনা এই ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে।
ওমিপ্রাজল আবিষ্কার হয় ১৯৭৯ সালে, এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি ওষুধের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
Comments
Post a Comment